কিডনির ছবি |
কিডনি কি?
মানবদেহের রচন অঙ্গ হলো বৃক্ক বা কিডনি। মানবদেহের উদরগহ্বরের পিছনের অংশে, মেরুদন্ডের দুদিকে বক্ষন্ঞ্জরের নিচে পৃষ্টপ্রাচীর সংলগ্ন অবস্থায় দুটি বৃক্ক বা কিডনি অবস্থান করে। প্রতিটি বৃক্কের আকৃতি শিমবিচির মতো এবং রং লালচে হয়। বৃক্কের বাইরের দিক অবতল হয়।
কিডনির কাজঃ
একজন স্বাভাবিক মানুষ প্রতিদিন প্রায় ১৫০০ মিলিয়ন মুত্র ত্যাগ করে। মুত্রে ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, এ্যামোনিয়া, ক্রিয়েটিনিন ইত্যাদি নাইট্রোন ঘটিত পদার্থ থাকে। যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসব অপ্রয়জনীয় ও ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ মূত্রের মাধ্যমে অপসারনে বৃক্ক অত্যন্ত গুরুপ্তপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। এছাড়াও কিডনি মানবদেহের সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্লোরাইড, ইত্যাদির পরিমান নিয়ন্ত্রন করে। সেই সাথে মানবদেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন, পানি, অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করে।কিডনির ভুমিকাঃ
যাবতীয় শারীরবৃত্তিক কাজ সম্পদানের জন্য মানবদেহে পরিমিত পানি থাকা প্রয়োজন। মূলত মূত্রের মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি পানি বের হয়ে যায়। পানির ভারসাম্য রক্ষার্থে কিডনি কাজ করে।কিডনিতে রোগের লক্ষণঃ
নানা রকম রোগের কারনে কিডনির স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটে। যেমনঃ- কিডনির প্রদাহ, প্রস্রাবে সমস্যা, কিডনিতে পাথর হওয়া উল্লেখযোগ্য। এছাড়া কিডনিতে রোগের লক্ষণগুলো হচ্ছেঃ-১. শরীর ফুলে যাওয়া
২. প্রস্রাবে প্রোটিন বা আমিষ যাওয়া
৩. রক্ত মিশ্রিত প্রস্রাব হওয়া
৪. প্রস্রাবে জ্বালা পোড়া
৫. ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া
৬. ঘনঘন প্রস্রাব বন্ধ হওয়া ইত্যাদি।
কিডনিতে পাথরঃ
মানষের কিডনিতে অদ্ভুদ ছোট আকারের পাথর জাতীয় পদার্থের সৃষ্টিই কিডনির পাথর হিসেবে পরিচিত। কিডনিতে পাথর সবারই হতে পারে। তবে দেখা গেছে, মেয়েদের তুলনায় পুরুষদের কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। অতিরিক্ত শারীরিক ওজন, বৃক্কে সংক্রামক রোগ, কম পানি পান করা, অতিরিক্ত প্রাণীজ আমিষ যেমনঃ- মাংস ও ডিম বেশি খাওয়া ইত্যাদি কিডনিতে পাথর হওয়ার কারন হতে পারে।কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণঃ
প্রাথমিক ভাবে কিডনিতে পাথর হলে তেমন সমস্যা ধরা পড়ে না। সমস্যা হয় তখন, যখন প্রস্রাব নালিতে চলে আসে ও প্রস্রাবে বাধা দেয়। কিভাবে বুঝবেন কিডনিতে পাথর হয়েছে? এর কিছু লক্ষণ তুলে ধরা হলোঃ১. কোমরের পিছনে ব্যথা হবে।
২. অনেকের প্রস্রাবের সাথে রক্ত বের হবে।
৩.অনেক সময় কাপুনি দিয়ে জ্বর আসে।
প্রতিকারঃ
কিডনির পাথরের চিকিৎসা নির্ভর করে পাথরের আকার ও অবস্থানের উপর। তবুও বিভিন্ন উপায়ে এর প্রতিকার করা যায়। যেমনঃ-অধিক পানি পান করলে ও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করেও পাথর অপসারণ করা যায়। এছাড়াও আধুনিক পদ্ধতিতে ইউটেরোস্কোপিক, আল্ট্রাসনিক লিথট্রিপসি অথবা কিডনিতে অস্ত্রোপচার করেও পাথর অপসারণ করা যায়।
কিডনি প্রতিস্থাপনঃ
যখন কোনো ব্যক্তির কিডনি বিকল বা অকেজো হয়ে পড়ে, তখন অন্য কোনো সুস্থ ব্যক্তির কিডনি তার দেহে প্রতিস্থাপন করা যায়। সাধারণত কিডনি স্থাপন দুভাবে করা যায়--১. কোনো নিকট আত্নীয়ের কিডনি একজন কিডনিরোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করেও এটি করা যায়। (এক্ষেত্রে নিকট আত্নীয় বলতে মা-বাবা, ভাই-বোন, মামা, খালাকে বোঝায়)
২. মরনোত্তক চক্ষুদানের মতো মরণোত্তক কিডনিদানের মাধ্যমে একজন কিডনি অকেজো রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভপর হতে পারে।
সমগ্র পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ কিডনি অকেজো রোগী কিডনি সংযোজনের মাধ্যমে সুস্থ জীবনযাপন করছে। বর্তমান বাংলাদেশেও কিডনি সংযোজন কার্যক্রম সাফল্যের সাথে করা হচ্ছে। মানুষের সব সময় একটি কিডনি কার্যকর থাকে। তাই একটি সুস্থ কিডনি সংযোজন কার্যক্রম সাফল্যের সাথে করা যায়। তবে দেখতে হবে যে একে অন্যের টিস্যু ম্যাচ করে কিনা। তবে মা-বাবা, ভাই-বোন বা নিকট আত্নীয়দের টিস্যু ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবণা খুব বেশি থাকে।
এক নজরে জেনে নিন, কিডনি কি? কিডনির কাজ, কিডনিতে রোগের কারণ ও প্রতিকার, প্রতিস্থাপন
Reviewed by Adsız
on
Aralık 22, 2018
Rating:
Hiç yorum yok: